নিউজ ডেস্ক, কলকাতা, জানুয়ারি,২০২২:- ব্রেথওয়েট ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতায়। ১৯৭৬সালে জাতীয়করণের সিদ্ধান্তে এই সংস্থাটি ব্যক্তি মালিকানাধীন থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে আসে।বর্তমানে রেলমন্ত্রকের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন।
এই সংস্থা মূলত রেলওয়ে রোলিং স্টক তৈরি, পুরানো রোলিং স্টকের মেরামত, রেট্রো ফিটমেন্ট, ওয়াগন কম্পোনেন্ট এর সাব অ্যাসেম্বলি তৈরি, রেলওয়ে ওয়ার্কশপের ও ও এম, সিভিল চাকরিসহ কাঠামোগত ইস্পাত সেতু অন্তর্ভুক্ত।
কলকাতার তাজ বেঙ্গল হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার পক্ষে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ,২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এই সংস্থার ব্যবসার ক্ষেত্রে আর্থিক পরিমাণ ছিল ১২০ কোটি থেকে ১৫০ কোটি টাকা। সেই সময় বাজারে দেনা ছিল ২৬ কোটি টাকা।
যেসব সংস্থা কাঁচা মাল সরবরাহ করত তাঁদের পাওনা ছিল ৫০ কোটি টাকা। ৭৬ কোটি টাকার দেনা নিয়ে এবং ৩০ লক্ষ টাকার মাসিক সুদ দিয়ে কর্মীদের বেতন দেওয়া ছিল খুব কঠিন ব্যাপার।
তারপরেই সংস্থায় চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দেন জ্যোতিষকুমার। দায়িত্ব ভার গ্রহণ করার সাথে সাথে তিনি কাঁচামাল সরবরাহকারী ও শ্রমিক সংগঠনের সাথে বৈঠক করেন। নেতিবাচক পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তিনি সবার সাহায্য চান।
নতুন ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের সাথে সাথে কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদেরও এই কাজের সাথে যুক্ত করেন। সকলের প্রচেষ্টায় এবং সহযোগিতায় এই রুগ্ন সংস্থা কঠিন সময় অতিক্রম করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করে।
সংস্থার তরফে দেওয়া এক তথ্য থেকে জানা গেছে ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ব্রেথওয়েট ৪৮৮.৪১ কোটি টাকার টার্নওভার করেছে এবং ৭০০ কোটি টার্নওভার অর্থাৎ আগের অর্থ বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে এই মহামারী পরিস্থিতির মধ্যেও। সকলের প্রাপ্য বেতন সঠিক সময়ে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়াও বলার মতো বিষয় হলো উদ্বৃত্ত ফান্ড ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে বহু পরিমানে সুদ তারা ব্যাংকের থেকে পেয়েছে।
সংস্থার এই উন্নতিতে ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সংস্থার ৫০ কোটি ইক্যুয়িটি শেয়ার গ্রহণ করে। সংস্থার কর্মকুশলতার পুরস্কার হিসেবে নতুন বছরের ১১জানুয়ারি একটি চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার ব্রেথওয়েট অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডকে মিনিরত্ন বিভাগে মর্যাদা ১ প্রদান করেছে।
ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা বা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা যখন লোকসানের দিকে ক্রমাগত তলিয়ে যাচ্ছে, তখন ব্রেথওয়েটের এই সাফল্য এক নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে এবং সেই সাথে কলকাতায় অবস্থিত এই কোম্পানিটি বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছে।
0 Comments