Header Ads Widget

Responsive Advertisement

NB NEWS ! অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস কলকাতা লঞ্চ করল পূর্ব ভারতের প্রথম ‘কমপ্রিহেনসিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিক

কলকাতা, আগস্ট,২০২২: যখন মহান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের লিভার সিরোসিস ধরা পড়েছিল তখন প্রত্যেক ভারতীয় ওই কথাটা জেনে গিয়েছিল। কিন্তু লিভার সিরোসিস হল এমন একটা অসুখের চূড়ান্ত স্তর, যা বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে শুরু হয় ফ্যাটি লিভার হিসাবে। আর প্রচলিত ধারণার বিপরীতে, যারা অ্যালকোহলিক নয় তাদেরও ফ্যাটি লিভার হতে পারে। বিশেষ করে যদি ডায়বেটিস, মেদবহুলতা এবং রক্তে কোলেস্টেরল অস্বাভাবিক মাত্রায় থাকে।

এই মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় যে রোগগুলো তার অন্যতম হল নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। পৃথিবীর প্রায় ৩০% মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। ন্যাশনাল হেলথ পোর্টাল ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুসারে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) সারা পৃথিবীতে দীর্ঘকালীন লিভারের অসুখের প্রধান কারণগুলোর অন্যতম। NAFLD পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ২৫%-কে প্রভাবিত করেছে। আফ্রিকার ১৩.৫% থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের ৩১.৮% মানুষ এই রোগের শিকার। ভারতে সব মিলিয়ে ৩০%-এর কাছাকাছি মানুষের মধ্যে NAFLD রয়েছে বলে জানা গেছে এবং মেদবহুলতা ও ডায়বেটিসের মত ঝুঁকিপূর্ণ অসুখ যাদের আছে, তাদের মধ্যে ৫০%-এর বেশি মানুষের কাছে এই অসুখ পৌঁছে গেছে।

ফ্যাটি লিভার অধিকাংশ সময়েই ধরা পড়ে না, কারণ এই অসুখের প্রাথমিক স্তরে কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা দেয় না। এই অসুখ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং সামগ্রিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস আজ পূর্ব ভারতের প্রথম ‘কমপ্রিহেনসিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিক’ লঞ্চ করল। এই ক্লিনিক লক্ষণবিহীন ফ্যাটি লিভার নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য সর্বাধুনিক পরীক্ষা নিরীক্ষাভিত্তিক পদ্ধতি অবলম্বন করবে।

যেহেতু এই অসুখ নীরবে কোনো বড়সড় সতর্ক করার মত লক্ষণ ছাড়াই বাড়তে থাকে, সেহেতু যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা জরুরি। সেই কারণে লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) ও আল্ট্রাসাউন্ড (USG)-এর মত স্বতঃপ্রণোদিত পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য পরিচর্যার পথপ্রদর্শক অ্যাপোলো পূর্ব ভারতে প্রথম ফাইব্রো স্ক্যান এবং MRI-PDFF এবং MR ইলাস্টোগ্রাফির মত MRI ভিত্তিক পরীক্ষা সমেত ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে উন্নত পদ্ধতির পরীক্ষাগুলো চালু করল। এই পরীক্ষাগুলো এই অসুখকে একেবারে প্রাথমিক স্তরেই ধরে ফেলতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত রোগীদের তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে এবং রোগটার খুব গুরুতর স্তরে পৌঁছনো আটকাতে সাহায্য করে।

লিভারকে ফ্যাটি বলে ধরা হয় যখন লিভারে ফ্যাট ৫%-এর বেশি হয়ে যায়। ডায়বেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং মেদবহুলতায় ভোগা মানুষের ফ্যাটি লিভার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০-৬০%। মোটামুটিভাবে ফ্যাটি লিভারের তিনটে স্তর আছে। ফ্যাটি লিভার – স্টেয়াটোসিস (NAFL), লিভার স্টেয়াটোহেপাটাইটিস (NASH) এবং লিভার সিরোসিস। NAFL রোগীদের ২০-২৫% NASH স্তরে পৌঁছে যান এবং ১০-১৫%-এর সিরোসিস অফ লিভার হয়, যা সারা পৃথিবীতে লিভার প্রতিস্থাপনের সবচেয়ে বেশি ঘটনার কারণ।

২০৩৫ সালের মধ্যে সারা পৃথিবীতে ডায়বেটিসে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা ৫৫% এবং মেদবহুলতায় আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা +৩৩% বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে (সূত্র: Bril F et al. Diabetes Care 2017, Finkelstein AJPM 2017)। সেক্ষেত্রে লিভারের অসুখও বাড়বে এবং ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সেই বৃদ্ধির হার ৬৩% হবে বলে মনে করা হচ্ছে (সূত্র: Younossi et al. J Hep 2018, Estes et al. Hepatol 2019)।

লঞ্চে উপস্থিত ডাঃ মহেশ কে গোয়েঙ্কা – ডিএমই অ্যান্ড ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড ইনস্টিটিউট অফ গ্যাস্ট্রোসাইন্সেজ অ্যান্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস, বলেন “সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে প্রায় ৩৫% ফ্যাটি লিভারের রোগী নন-অ্যালকোহলিক এবং তাঁদের ক্ষতি সারিয়ে তোলা মুশকিল, কারণ স্রেফ সচেতনতার অভাবে তাঁদের রোগনির্ণয় অনেক পরে হয়। গত দুই দশকে ভারতে আরেকটা প্রবণতা পাওয়া গেছে, যার নাম লিন ফ্যাটি লিভার। এটা দেখা যায় মেদবহুলতার কোনো চিহ্ন না থাকা মানুষের মধ্যে। এই রোগীরাও অসুখের প্রাথমিক স্তরে নজরে পড়েন না, যদি না স্বতঃপ্রণোদিত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। দ্রুত রোগনির্ণয় হলে এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন করলে ফ্যাটি লিভার সারিয়ে তোলা সম্ভব, কিন্তু সিরোসিস যদি দেরি করে ধরা পড়ে তাহলে তার বৃদ্ধি আটকানো শক্ত।”

ডাঃ সুরিন্দর সিং ভাটিয়া – ডিএমএস (ডিরেক্টর মেডিকাল সার্ভিসেস) উল্লেখ করেন “যদিও ফ্যাটি লিভার তরুণদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়, ডায়বেটিস এবং/অথবা মেদবহুলতায় ভোগা শিশুদের মধ্যেও এটা পাওয়া যায়। আমাদের কমপ্রিহেনসিভ ফ্যাটি লিভার ক্লিনিকে লক্ষণবিহীন ফ্যাটি লিভার নির্ণয়ের সমস্ত আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতি রয়েছে, যাতে অসুখটাকে শুরুতেই আটকানো যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওষুধ একমাত্র চিকিৎসা নয়। নিয়মিত পরীক্ষা করিয়ে তার ফলাফল দেখে মূল্যায়ন করতে হয়। এই রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি নানাবিধ জিনিসের সমাহার। তার মধ্যে আছে ডাক্তারের পরামর্শ, জীবনযাত্রার পরিবর্তন সম্পর্কে কাউন্সেলিং এবং প্রাথমিক পরিচর্যা, ইন্টার্নিস্ট, নিউট্রিশনিস্ট, এক্সারসাইজ কাউন্সেলর্স, এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট, বেরিয়াট্রিক শল্যচিকিৎসক সমেত চিকিৎসাব্যবস্থার বিভিন্ন স্তর।”

Post a Comment

0 Comments