ডিজিটাল ডেস্ক,শান্তিনিকেতন, নভেম্বর,২০২২:-গত ২৭ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত সম্পন্ন হলো ‘দল নাট্যগোষ্ঠী’র ৫ দিনব্যাপি আবাসিক অভিনয় কর্মশালা। দলের সদস্যরা ছাড়াও কর্মশালায় অংশগ্রহন করেছিল শান্তিনিকেতনে পাঠরত বিভিন্ন ভবনের নাট্যোৎসাহী ছাত্র-ছাত্রীরা।
আবহমান কাল ধরেই নাট্য বিদ্যার ধারা নতুন থেকে নতুনতর পথে এগিয়ে চলেছে। ফলস্বরূপ প্রাচীন ও নতুনের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে অভিনয়ের বিভিন্ন রীতি ও কৌশল। নাট্যাভিনয়ের ক্ষেত্রে অভিনেতার শরীরই তার প্রধান অস্ত্র। তাকেই একজন দক্ষ অভিনেতা বলা যায় - যিনি তাঁর শরীরকে খুবই সুন্দর ও সুললিতভাবে সঞ্চালনে সক্ষম। আর তাই, কর্মশালার মূলে ছিল শারীরিক প্রতিভঙ্গির সুষম গঠন।
শারীরিক অনুশীলনগুলির পাশাপাশি যোগ হয়েছিল গ্রাম-বাংলার কিছু লোকজ খেলা। সারাদিনের কার্যক্রম শেষে সন্ধ্যার আলোচনায় ছিল ভারতীয় নাট্যশাস্ত্রের পর্যালোচনা, পাশ্চাত্য নাটকের ধারা ও আদি গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাট্যশৈলীর বিবর্তন ইত্যাদি।
শান্তিনিকেতনের পরিবেশ ছাড়িয়ে দিগন্ত বিস্তৃত গড় জঙ্গলের ‘তেপান্তর নাট্যগ্রামে’ কর্মশালাটি আয়োজন করার উদ্দেশ্য ছিল শান্তিনিকেতনের ইতিহাসকে পেরিয়ে আরও পুরানো ইতিহাসের ঐতিহাসিকতাকে ছুঁতে পাওয়ার চেষ্টা। ইতিহাসটা অবশ্য ১০০ কিংবা ২০০ বছরের নয়, সেই ৯০০ বছর আগের সেন বংশের লাউ সেন, লক্ষণ সেন, বল্লল সেনের এই গড় জঙ্গলের মাটিতে বসবাস স্থাপন, সেই সময়ের প্রথম মা দুর্গার আরাধনা ও তাঁর ‘শ্যামারূপা’ রূপ, দেউলের প্রাচীন শিব মন্দির, ২০০ বছর আগের আযোধ্যা গ্রামের পিতলের রথ ও মন্দির গাত্রের কারুকার্যের সমস্ত ইতিহাসটাই সামনা-সামনি প্রত্যক্ষের সুযোগ ঘটে।
সব মিলিয়ে ৫দিনের একসাথে ওঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া, অনুশীলন হয়ে উঠেছিল সেইকালের আশ্রমিকদের মত। যার ফলে কর্মশালাটি হয়ে উঠেছে ‘প্রত্যেকে স্বতন্ত্রভাবে নতুন কিছু শিখতে চাওয়া’ থেকে ‘একসাথে দলবদ্ধ হয়ে নতুনের সম্মুখীন হওয়া’রই দৃষ্টান্ত।
0 Comments